2020
- থাইরয়েড -১ম পর্ব -উপাদানসমূহ -জেনে ’-মন ‘ডি’ ‘মাইন্ড ০টি ১০ ১২ ১৩ ২০২২ ৫০ ভাগ ৬ষ্ঠ ৯ম অক্সিডেন্টের অজানা অজু অজু ঘাড় অজু ঘাড় মাসহ অজু মাতা অতিরিক্ত অনুযায়ী অন্ধত্ব অন্যতম অন্যান্য অপকারিতা অপকারিতাও অপরিহার্য অবস্থায় অব্যর্থ অভাব অভাবজনিত অভাবে অভ্যাস অমলেট অলিভ ওয়েল অসাধারণ অসুখ অসুস্থতা অ্যাটাক অ্যাটাকের অ্যান্টি অ্যান্টিবায়োটিক অ্যাসিডিটির আঁটির আক্রান্ত আখরোট আজ আট আদা আদা- আনতে আপনাকে আপনার আপেল আমড়া আমন্ড আমলকীর আমিষ আমিষের আমের আযান আযান কালিমা আযান জবাব আযান দোয়া আযান ফজিলত আশ্চর্য ইংলিশের ইকামত ইমিউনিটি উচিত উচ্চ উচ্চ রক্তচাপ উচ্চতায় উঠার উৎস উপকার উপকারিতা উপকারিতার উপকারী উপকারী- উপাদান উপাদানের উপায় উপায়ে এইচএসসি এক একটি একসঙ্গে এজমা এড়াতে এডাপটেশনের এবং এমসিটি এমসিটি অয়েল এমসিটি ওয়েল এর এলার্জি এসএসসি এসব ওজন ওজন কমাতে ফাস্টিং ওজন কমানো ওটস ওমেগা- ওমেগা-৬ ওয়াক্ত ওষুধ ওষুধের কচু কঠিন কত কতটুকু কতদিন কফি কম কমবে কমাতে কমান কমানোর কমায় কমায় খালি ،পেটে ،লেবু ،পানি কমিয়ে কমে কয়েকটি করণীয় করবে করবেন করার করুন করে করেন কাউন্ট কাঁচা কাছে কাজ কাজু কাজু বাদাম কাঠবাদাম কাদের কাদের- কারণ কারণে কার্যকারিতা কালোজিরা কাশির কি কিছু কিছু ভুল কিটো ডায়েটিং কিটো ফুড কিডনি কিডনির কিডনী কিনা কীভাবে? কুমড়া কুমড়ো বীজ কে সত্যিকারী কেন কেন? কেন্দ্র কমিটি কোন কোমর কোষ্ঠকাঠিন্য ক্যানসার! ক্যান্সার ক্লান্তি ক্ষতিকর ক্ষতিকর- ক্ষয় ক্ষয়ের ক্ষুধা ক্ষেত্রে খনিজ খাওয়া খাওয়ার খাচ্ছেন খাদ্য খাদ্যের খান খাবার খাবারগুলো খাবারে খাবেন খালি খালি পেটে খাসি খেলে খেলেই খোরমা গরু গর্ভকালে গলা গলাব্যথা গাওয়া ঘি গাজরের গু গুণ গুণাগুণ গুন গোসলকে গ্যাসট্রিকস গ্যাস্ট্রিকের গ্রিণ টি গ্লাস ঘটাতে ঘণ্টা ঘণ্টার ঘনত্ব ঘরে ঘরোয়া ঘরোয়া চিকিৎসা ঘাড় ঘি ঘুম ঘুমানো ঘুমানোর চর্বি চা চা-সিগারেট- চাইলে চাপ চালের চাহিদা চিয়া চিয়া বীজ চুল চুলের যত্ন চোখ ছবি ছেড়ে ছোলা জন্য জমা জয়েন্টে জয়েন্টের ব্যা্থা জরুরি জানা জানুন জিকির জিকির আত্মা জুস জুসের জেনে জ্বালা ঝাল ঝিনঝিন ঝুঁকি টক টক্সিন ঠান্ডার সমস্যা ঠিকমতো ঠেকাতে ডাব ডাবেই ডায়াবেটিকস ডায়াবেটিস ডায়েট ডায়েটিং ডিম ডেকে ণ-ডায়াবেটিস তথ্য তাফসির তাফসির কুরআন তারাবীহ তারাবীহ আট তাসবিহ তাসবিহ নামাজ তুলনায় তুলসি তেঁতুল- তেঁতুলের তেল তেলের তেলের গুণ তৈরি ত্বক পরিচর্যা ত্বক ভালো রাখে ،লেবুর ত্বকের থাকবে থাকলে থেকে থেকেও দই দইয়ের দাওয়াত দাঁত দাঁতের দারুচিনি দারুচিনির দিক দিতে দিবস দিয়ে দুটি দুধ দুপুরে দূর দূরে দেখতে সারডিন দেবেন দেয়া দেরি দেহে দৈনিক দোয়া দোয়া সালাত দ্রুত ধনিয়া ধৈর্য নফল না না এসব নানা নারকেল নারকেল তেল নারী নারী রোজা নাস্তা নিচে নিন নিম নিয়ন্ত্রণসহ নিষেদ নিষেধ নুন-জলে নেই পড়া পড়াসহ পদ্ধতি পদ্ধতি বিজ্ঞান পর পরিত্রাণ পরিবর্তন পরিষ্কার পরীক্ষা পরীক্ষার পরীক্ষার্থীদের পরে পাওয়ার পাঁচ পাঁচটি পাকস্থলিতে পাতা ও ফলে সমাধান পাতার পাথর পান পানি পানিশূন্যতা পানীয়তে পানে পানের পাবেন পায় পায়ে পারে পাশাপাশি পিংক সল্ট পিনাট বাটার পুরুষের পুষ্টি পুষ্টি গুণ পুষ্টিকর পুষ্টিগুণ পেঁপে পেঁপের পেঁয়াজের পেট পেটে পেটের পেটের চর্বি পেয়ারা পেয়ারার পোচের প্রক্রিয়াজাত প্রচণ্ড প্রচলিত প্রচুর প্রতিকার প্রতিদিন প্রতিরোধ প্রতিরোধী প্রত্যেকদিন প্রধান প্রভাব প্রয়োজন? প্রশ্নোত্তর প্রস্রাব প্রস্রাবের প্রস্রাবের সমস্যা প্রাকৃতিক প্রাণঘাতী প্রোটিনের প্লাস্টিকের ফজিলত ফল ফলগুলো ফলাফল ফিজিওথেরাপি ফেলে ফোলাভাব ফ্যটি লিভার ‌‌ফ্যাট বদহজমের বন্ধ বন্ধ্যাত্ব বয়সে বলুন বা বাড়বে বাড়াতে বাড়াবেন বাড়ায় বাড়ে বাদাম বাদাম ওজন ،কমায়، বাদাম মিক্সড বারণ বার্ষিক বালিশের বিকল বিকল্প বিতির বিতির কুনুত বিতির সহীহ বিদেশী ফল বিপদ বিরুদ্ধে বিশেষ বিশ্ব বীজ বুঝবেন বুঝে বৃদ্ধি বেদানা বের বেশি বোঝা বোতলে ব্যথা ব্যবহার ব্যায় ব্যায়াম ভয়ানক ভাজা ভাত ভাব ভালো রাখতে খাবেন ভিজিয়ে ভিটামিন ভিনেগার ভিনেগারের ভুলেই ভুলেও ভেজানো ভেষজ মগজের খাবার মত মতামত মধু মধ্যে মশলায় রোগ সাড়ে মস্তিষ্ক মাইগ্রেনের মাংস মাখরাজ মাখরাজ দোয়াদ মাছ মাছের মাড়ি মাত্র মাত্রাতিরিক্ত মাথাব্যথা মাথার মাথার সমস্যা মাধ্যমে মানবদেহে মানবদেহের মানসিক মারাত্মক মাসায়েল মাসায়েল আযান মিডিয়া মিলবে মিষ্টি মিস্টি কুমড়া মুক্তি মুক্তির মুরগি মৃত্যু মৃত্যুর মেথির মোটা মোটা হওয়ার উপায় মোটা হওয়ার ইপায় মোবাইল মোবাইলের যত যন্ত্রণা যা যাওয়ার যাচ্ছেন? মেটাবলিজম যাদের যাবে যায় যে যেতে যেভাবে যেসব যোগ যোগায় যৌনক্ষমতা যৌবন যৌবন শক্তি র পর রক্ত রক্তচাপের রক্তের রয়েছে রসুন রাখতে রাখবে- রাখার রাজমা রাতে রাতের খাবার রান্নায় রুই রুকু রুকু কোরআন রুটিনে রূপচর্চায় রেখে রেসিপি রোগ রোগীদের রোগীরা রোগে রোগেও রোজ রোদ রোধ রোধে লক্ষণে লড়ে লিভার লিভারে লেবু লেবুর শক্তি শতকরা শরীরকে শরীরে শাক শাকের শিক্ষা শিক্ষার্থীদের শুকনো শুরু শোক শ্রেণির সংবাদ সকালে সকালের সঙ্গে সবজি সবুজ সব্জি সময় সমস্যা সমস্যার সমাধান সমাধান- সমৃদ্ধ সরিষার তেল সর্দি সর্দি- সহায়ক সাওম সাওম আযান সাত সাথে সাধারণ সাফল্য সারাতে সালাত সালাত রং ঈফ সালের সি সিডার সিদ্ধ সিলেবাস সীডের সুস্থ সুস্বাদু সুস্বাস্থ্যের সূর্যমূখী বীজ সূর্যাস্তের স্তর স্পার্ম স্বাস্থ্য স্মৃতিশক্তি হওয়া হওয়ার হজম হতে হবে হয় হয়? হয়ে হলুদ হলে হলো হাঁটুর হাড় হামলা হার্ট হার্টের হার্টের সমস্যা হিমালয়ের হিসেব হিসেবে হৃদরোগ হৃদরোগের হেপাটাইটিস হোয়াটসঅ্যাপ Extra Virgin kito Ok Olive Oil

 সহীহ হাদিস অনুযায়ী এশার নামাজ প্রধানত মোট ৬ রাকায়াত।

৬১৯ খ্রিষ্টাব্দের ২৭শে রজব তারিখে মিরাজের সময় পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ হওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়। উল্লেখ্য যে, এ সময় জোহর, আসর ও ইশা ২ রাকায়াত পড়ার বিধান ছিল। ৬২৩ খ্রিষ্টাব্দে আল্লাহর তরফ থেকে ২ রাকায়াত বিশিষ্ট যোহর, আসর ও এশাকে ৪ রাকায়াতে উন্নীত করার আদেশ দেয়া হয়।

অর্থাৎ ইশার ৪ রাকায়াত ফরজ। এবং তারপর ২ রাকায়াত সুন্নাত এই ২ রাকায়াত সুন্নাত হল সুন্নাতে মুয়াক্কাদা। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামাজের পূর্বে ও পরে ১২ রাকায়াত সুন্নাত নামাজ নিয়মিত আদায় করতেন, বিশেষ কোন কারণ ছাড়া তা ত্যাগ করতেন না। এই জন্য এই ১২ রাকায়াত সুন্নাতকে সুন্নাতে মুয়াক্কাদা বলা হয়। সুন্নতে মুয়াক্কাদার মর্যাদা প্রায়ওয়াজিবের মতো। যা ছাড়লে গুনাহ হয়।

আবদুল্লাহ ইবনু শাকীক (রহঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেনঃ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সালাত 'সুন্নাত' নামাজ সম্পর্কে আমি আয়িশা রাদিয়াল্লাহু আনহা কে জিজ্ঞেস করেছিলাম। তিনি বলেছেনঃ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এশার পর ২ রাকায়াত 'সুন্নাত' সালাত আদায় করতেন। (সংক্ষিপ্ত)

আয়িশাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যে ব্যক্তি নিয়মিত বারো রাকআত সুন্নাত নামাজ পড়বে, তার জন্য জান্নাতে একটি প্রাসাদ নির্মাণ করা হবে।

তা হচ্ছে, যোহরের 'ফরজের' আগে ৪ রাকায়াত ও 'ফরজের' পরে ২ রাকায়াত, মাগরিবের 'ফরজের' পরে ২ রাকায়াত, এশার 'ফরজের' পরে ২ রাকায়াত এবং ফজরের (ফরযের) পূর্বে ২ রাকায়াত।

রেফারেন্সঃ সূনান তিরমিজী (ইফাঃ), হাদিস নম্বরঃ ৪৩৬ সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস নম্বরঃ ১১৪০ হাদিসের মানঃ সহিহ।

এশার ৪ রাকায়াত ফরজ নামাজের আগে ৪ রাকায়াত গায়েরে সুন্নাতে মুয়াক্কাদা আছে। গায়েরে সুন্নাতে মুয়াক্কাদা নামাজ ঐচ্ছিক তবে একেবারে বাদ দেয়া যাবে না। এশার আগে এই ৪ রাকায়াত সুন্নাত নামাজ সহিহ হাদিস দ্বারা সাব্যস্ত হয়নি।

অনেকে বেতেরের ৩ রাকায়াত ওয়াজিব নামাজ কে এশার নামাজেরর সাথে এক করে ফেলেন। বেতেরের নামাজ কোনভাবেই এশার নামাজের অংশ নয় এটার সাথে এশার নামাজের কোন সম্পৃক্ততা নেই।

ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু  আট  রাকাত তারাবি চালু করেছিলেন  //
সায়েব ইবনু ইয়াযিদ (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বললেন, 'ওমর (রাঃ)  উবাই ইবনু কাব ও তামিম আদ - দারি (রহঃ) -কে লোকদেরকে নিয়ে ১১ রাকআত ছালাত আদায় করার নির্দেশ প্রদান করেন।  ...তারাবীহের ৮ রাক'আতের অকাট্য প্রমাণ।  উপরোক্ত হাদীসটি বিভিন্ন সনদে বহু হাদীস গ্রন্থে বর্ণিত হয়েছে।  তার  সবগুলোই সহীহ।( 20 )  আল্লামা নিমভী হানাফি (রাঃ) তাঁর 'আজারুস সুনান গ্রন্থে হাদীসের সনদ সম্পর্কে বলেছেন, "এই হাদীসের সনদ সহীহ। ( 20 ) শায়খ আলবানী বলেছেন, "এই হাদীসের সনদ অত্যন্ত বিশুদ্ধ। কারণ  সায়েব ইবনে ইয়াজিদ একজন সাহাবি। তিনি  রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে হজ্ব করেছেন। (21)
 সূত্রঃ (19)  মুওয়াত্তা মালেক 1/115 পৃষ্ঠা, 'রমজান মাসে রাতের ছালাত' অনুচ্ছেদ;  সাহাহ হাবনে খুযায়মাহ 4/696 পৃষ্ঠা ;;  সা Saeedদ ইবনে মনসুর, আস-সুনান;  কিয়ামুল লাইল, পৃ।  91;  আবু বকর আন-নিসাপুরি, আল-ফাওয়াইদ 1/135 পৃষ্ঠা;  বেহাকী, আল-মা'রাফাহ;  ফিরিয়াবী ১/6 পৃ।  এবং 2/75 পি ;;  আলবানী, তাহক্বিকির মিশকাত (বৈরুত আল মক্তবুল ইসলামী, 1985/1405), 1/406 পৃষ্ঠা, এইচ / 1302 নোট সহ;  উপমহাদেশীয় মুদ্রিত মিশকাত, পি।  115;  বাংলা অনুবাদ মেশকাত, ৩/১৫২ পৃষ্ঠা, এইচ / ১২২৮, রমজান মাসে রাতের ছালাত 'অনুচ্ছেদে।   (20) তুফতাতুল আহওয়াজী ৩ য় খণ্ড, পৃ। ( 21)মুহাম্মদ নাসিরুদ্দিন আলবানী, ইরওয়ুল গালিল ফাই তাখারিজি আহাদচি মানারিস সাবিল (বৈরুত: আল-মক্তবুল ইসলামী, দ্বিতীয় সংস্করণ: 1985/1405 হি), দ্বিতীয় খণ্ড, পিপি 192-93, হা / 445;  সালাতুত তারাবীহ, পৃষ্ঠা 45-46।


তাফসির সমূহ//
1,তাফসির ইবনে আব্বাস-হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস, 2/তাফসির গারিবিল কুরআন - ইমাম মালেক বিন আনাস, 3/তাফসীর কিতাবুত তাফসির- ইমাম আহমদ বিন মুহাম্মদ বিন হাম্বল ,4/তাফসীর তাবারী- মুহাম্মদ ইবনে জাবীর তবারী , 5/তাফসীর সমরকন্দী -আবু লাইছ ( হানাফী ) , 6/তাফসীর কাশশাফ -মাহমুদ বিন উমার ( মুতাযেলী ), 7/ তাফসীর কাবীর- ফখরুদ্দীন রাজী, 8/তাফসীর বায়যাবী -মুহাম্মাদ বিন উমার , 9/তাফসীর কুরতুবী- আবু আব্দুল্লাহ মুহাম্মাদ বিন আহাম্মদ,10/ তাফসীর নাসাফী- আব্দুল্লাহ বিন আহমাদ,  11/তাফসীর ইবনে কাসীর- ইমাদুদ্দীন আবুল ফিদা ইসমাইল,  12/ তাফসীর আত্তিবইয়ান -ইবনুল কাইয়ুম,   13 /তাফসীর জালালাইন , জালালুদ্দীন মহল্লী ও জালালুদ্দীন সুয়ূতী 14/ তাফসীর রুহুল বয়ান - ইসমাইল আফেন্দী  15/ তাফসীর আহমদী আহাম্মদ মােল্লাজিউন 16/তাফসীর মাযহারী , সানাউল্লাহ পানি পথি 17/ তাফসীর রুহুল মায়ানী -শেখ আলুসী বাগদাদী 18 /তাফসীর ফতহুল আজিজ -শাহ আঃ আজিজ 19 / তাফসীর বয়ানুল কুরআন - আশ্রাফ আলী থানভী 20 / তাফসীর তাফহিমুল কুরআন- আবুল আলা মৌদুদী 21 / তাফসীর মায়ারিফুল কুরআন- মুফতী শফী 22/ তাফসীর তাইসীরুল কুরআন -অধ্যাপক মােহাম্মাদ মােজাম্মেল হক ।

নামায ককুতে কোরআন পড়া নিষেধ //
( সঃ ) রুকু ও সাজদায় কোরআন পড়তে নিষেধ করেছেন । তিনি বলেছেন , আমাকে রুকু ও সাজদায় কোরআন পড়তে নিষেধ করা হয়েছে । তােমরা রুকুতে আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্ব প্রকাশ কর এবং সাজদায় বেশী বেশী করে দোআ কর । সাজদা দোআ কবুলের উপযুক্ত জায়গা । সূত্রঃ মুসলিম , আবু আ'ওয়ানা । এই নিষেধাজ্ঞা ফরয ও নফল সকল নামাযের ক্ষেত্রে  প্রযোজ্য । ইবনু আাসাকির নফল নামাযে জায়েয বলে যে মন্তব্য করেছেন , তা দুর্বল।

সালাতের ফজিলত সম্পর্কে জঈফ ও জাল হাদিস

12
প্রবন্ধটি পড়া হলে, শেয়ার করতে ভুলবেন না
রহমান রহীম আল্লাহ্‌ তায়ালার নামে-
mithabolarsasti
সালাত জান্নাতের চাবি কথাটি সমাজে বহুল প্রচলিত । অনেকে বুখারিতে আছে বলেও চালিয়ে দেয়াই পছন্দ করে। আসলে এর কোন ভিত্তি নাই।

হাদিস নং ১।

জাবের ইবনু আব্দুল্লাহ (রা) বলেন, রাসুলুল্লাহ (ছা) বলেছেন, জান্নাতের চাবি হল সালাত। আর সালাতের চাবি হল পবিত্রতা।
(মুসনাদে আহমাদ হা/১৪৭০৩ তিরমিজি হা/৪ মিস্কাত হা/২৪৯ ফাজায়েলে আমাল  ৮৮ পৃ)
তাহকিকঃ
হাদিস এর প্রথম অংশ  জঈফ (জঈফুল জামে হা/৫২৬৫, সিলসিলা ই জঈফা হা/৩৬০৯) দ্বিতীয় অংশ পৃথক সনদ এ ছহিহ সুত্রে বর্ণিত আছে। (আবু দাউদ হা/৬১, তিরমিজি হা/৩)
হাদিসটির প্রথম অংশ জঈফ হবার কারন হল- উক্ত সনদ এ দুইজন দুর্বল রাবি আছে। (ক) সুলাইমান বিন করম ও (খ) আবু ইয়াহিয়া আল-কাত্তাত।
(আলবানি, মিস্কাত হা/২৯৪ এর টিকা দ্রষ্টব্য)
জ্ঞাতব্যঃ
জান্নাতের চাবি সম্পর্কে ইমাম বুখারি (রহ) একটি অনুচ্ছেদের বিষয়বস্তু আলোচনা করতে গিয়ে ওহাব ইবনু মুনাব্ববিহ (রহ) থেকে যে বর্ণনা এসেছে তা হল-
“লা ইলাহা ইল্লাল্লহ” কি জান্নাতের চাবি? তখন তিনি বলেন, হ্যাঁ। তবে প্রত্যেক চাবির দাত রয়েছে। তুমি যদি এমন চাবি নিয়ে আসো যার দাঁত রয়েছে, তাহলে তোমার জন্য জান্নাত খোলা হবে। অন্যথাই খোলা হবে না।
(বুখারি ১/১৬৫ পৃ হা/১২৩৭ এর পূর্বের আলোচনা দ্রষ্টব্য)
অনলাইনে নিরাপদ থাকতে ব্যাবহার করুন "Brave ব্রাউজার"। ডাউনলোড করতে এইখানে ক্লিক করুন
এছারাও আরও অন্নান্য ছহিহ হাদিস দারাও এটা প্রমানিত।
(বুখারি হা/৫৮২৭, মুসলিম হা/২৮৩, )
তাই, “লা ইলাহা ইল্লাল্লহ” হল জান্নাতের চাবি আর শরিয়াতের অন্নান্য আমল-আহাকাম অর্থাৎ সালাত, সিয়াম, হাজ, যাকাত ইত্যদি ওই চাবির দাঁত।

হাদিস নং ২।  

সালাত হল দিনের খুঁটি। সুতারাং যে ব্যাক্তি সালাত কায়েম করলো সে দ্বীন প্রতিষ্ঠা করলো। আর যে ব্যাক্তি সালাত ছেড়ে দিল সে দ্বীনকে ধ্বংস করল।
(কাশফুল খাফা ২/৩২ পৃ, তাযকিরাতুল  মউজুয়াত পৃ ৩৮, ফাজায়েলে আমাল  ২৯ পৃ)
তাহকিকঃ
সমাজে হাদিসটির সমাধিক প্রসার থাকলেও হাদিসটি গ্রহন যোগ্য নয়। ইমাম নাবাবি (রহ) বলেন, এটি বাতিল ও মুনকার।
(কাশফুল খাফা ২/৩১ পৃ,)

হাদিস নং ৩।

রসুল (সা) বলেছেন, সালাত মুমিনের মিরাজ।
(তাফসিরে রাযি ১/২১৮ পৃ, তাফসিরে হাক্কি ৮/৪৫৩ পৃ, মিরকাতুল মাফাতিহ ১/১৩৪ পৃ, “ইমান” অধ্যায়)
তাহকিকঃ
উক্ত বর্ণনার কোন সনদ নাই। এটি ভিত্তিহিন ও বানোয়াট।

হাদিস নং ৪।

আনাস (রা) বলেন, রসুল (সা) বলেছেন, “সালাত মুমিনের নুর”
(মুসনাদে আবি ইয়ালা হা/৩৬৫৫, ফাজায়েলে আমাল  ২৯ পৃ)
তাহকিকঃ
বর্ণনাটি জইফ। মুহাদ্দিস হুসাইন সালিম আসাদ (রহ) বলেন, উক্ত হাদিসের সনদ অত্যন্ত দুর্বল।
(তাহকিক মুসনাদে আবি ইয়ালা হা/৩৬৫৫,)
উক্ত হাদিসের সনদে ইসা ইবনু মাইসারা নামে একজন দুর্বল রাবি আছে।
(সিলসিলাই জইফা হা/১৬৬০)
উল্লেখ্য, ছলাত নুর, সাদাকা দলিল মর্মে মুসলিমে যে হাদিস বর্ণিত হয়েছে তা ছহিহ।
(মুসলিম হা/৫৫৬, মিস্কাত হা/২৮১)

হাদিস নং ৫।

যে বাক্তি জামাতের সাথে ফজরের সালাত আদায় করে সে যেন আদম (আ) এর সাথে পঞ্চাশ বার হজ করে এবং যে বাক্তি জামাতের সাথে যোহরের সালাত আদায় করে সে যেন নুহ (আ) এর সাথে চল্লিশ কিংবা ত্রিশ বার হজ করে। এভাবেই অনন্যা ওয়াক্ত সে আদায় করে।
(হাসান ইবনু মুহাম্মাদ আস-ছাগানি, আল-মউজুয়াত হা/৪৮ পৃঃ ৪২)
তাহকিকঃ
বর্ণনাটি জাল ও মিথ্যা।
(আল-মউজুয়াত হা/৪৮ পৃঃ ৪২)

হাদিস নং ৬।

সালমান ফারসি (রা) বলেন, আমি রাসুল (সা) কে বলতে শুনেছি, যে বাক্তি ভোরে ফজরের ছালাতের দিকে আগিয়ে গেলো সে ইমানের পতাকা নিয়ে গেলো। আর যে বাক্তি ভোরে (ফজরের সালাত আদায় না কওরে) বাজারের দিকে  আগিয়ে গেলো সে শয়তানের পতাকা নিয়ে গেলো।
(ইবনু মাজাহ হা/২২৩৪, বঙ্গানুবাদ মিস্কাত হা/৫৮৯)
তাহকিকঃ
উক্ত হাদিসের সনদ অত্যন্ত দুর্বল। এর সনদে উবাইস ইবনু মাইমুন নামক রাবি রয়েছে। ইমাম বুখারি (রহ) সহ অন্যান্য মুহাদ্দিছ গন তাকে মুনকার বলে অভিযোগ করেছে। ইবনু হিব্বান (রহ) বলেন, সে নির্ভরশীল বাক্তির নাম দিয়ে ধারনা পূর্বক বহু জাল হাদিস বর্ণনা করেছে।
(আলবানি, জইফ ইবনু মাজাহ হা/২২৩৪, মিস্কাত হা/৬৪০ টিকা দ্রষ্টব্য)

হাদিস নং ৭।

ইমরান ইবনু হুসাইন (রা) বলেন, রাসুল (সা) কে একদা জিজ্ঞাস করা হল, আল্লাহর এই বানি সম্পর্কে-“নিশ্চয়ই সালাত অশ্লীল ও মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখে” তখন তিনি বললেন, যাকে তার সালাত অশ্লীল ও মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখে না “তার সালাত হয় না”।
(তাফসির ইবনে কাসির; সিলসিলা ই জইফা হা/৯৮৫, ফাজায়েল এ আমাল পৃঃ ১৭২)
তাহকিকঃ
হাদিসটি জইফ। উক্ত বর্ণনার সনদে ইবনু জুনাইদ নামে একজন মিথ্যুক রাবি রয়েছে। মুহাদ্দিসগণ বর্ণনাটিকে মুনকার বলেছেন।
(সিলসিলা ই জইফা হা/৯৮৫৫)

হাদিস নং ৮।

ইবনু আব্বাস (রা) হতে বর্ণিত, রাসুল (সা) বলেন, যার সালাত তকে অশ্লীল ও মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখে না তাকে উহা ইসলাম থেকে দূরে সরে দেয়া ছারা আর কিছুই বৃদ্ধি করে না।
(ফাজায়েল এ আমাল পৃঃ ১৭৩, তাবারানি, আল-মুজামুল কাবির হা/১০৮৬২)
তাহকিকঃ
বর্ণনাটি বাতিল বা মিথ্যা। এর সনদে লইস ইবনু আবি সালিম নামক ত্রুতিপূর্ণ  রাবি রয়েছে।
(সিলসিলা ই জইফা হা/২)
জ্ঞাতব্যঃ
উক্ত বর্ণনা প্রমান করে ত্রুটিপূর্ণ কোন বাক্তি সালাত আদায় করলে সালাত কবুল হয়না। সুতারাং সালাত আদায় করে কোন লাভ নাই। কিন্তু উক্ত ধারনা সঠিক নয়। বরং সালাত আদায়ের মাধ্যমে এক সময় সে আল্লাহর অনুগ্রহে পাপ কাজ ছেড়ে দিবে। ছহিহ হাদিসে বর্ণিত হইছে,
আবু হুরাইরা (রা) বলেন, জনৈক বাক্তি রাসুল (সা) এর নিকটে এসে বললেন, অমুক বাক্তি রাতে সালাত আদায় করে আর সকাল হলে চুরি করে। তিনি উত্তরে বললেন, সালাত তাকে অচিরেই তা থেকে বিরত রাখবে।
(আহামাদ হা/৯৭৭৭, মিস্কাত হা/১২৩৭, সনদ ছহিহ)
চলবে……
Print Friendly, PDF & Email

'আপনিও হোন ইসলামের প্রচারক'
প্রবন্ধের লেখা অপরিবর্তন রেখে এবং উৎস উল্লেখ্য করে 
আপনি Facebook, Twitter, ব্লগ, আপনার বন্ধুদের Email Address সহ অন্য Social Networking ওয়েবসাইটে শেয়ার করতে পারেন, মানবতার মুক্তির লক্ষ্যে ইসলামের আলো ছড়িয়ে দিন। "কেউ হেদায়েতের দিকে আহবান করলে যতজন তার অনুসরণ করবে প্রত্যেকের সমান সওয়াবের অধিকারী সে হবে, তবে যারা অনুসরণ করেছে তাদের সওয়াবে কোন কমতি হবেনা" [সহীহ্ মুসলিম: ২৬৭৪]


নামাযে দোয়া করার স্থানসমূহ দুই প্রকার:
প্রথম প্রকার: যে স্থানগুলোতে দোয়া করা মুস্তাহাব হওয়ার ব্যাপারে দলিল-প্রমাণ এসেছে ও দোয়া করার প্রতি উৎসাহিত করা হয়েছে। নামাযীর জন্য এ স্থানগুলোতে তার সাধ্যানুযায়ী দীর্ঘ সময় ধরে দোয়া করা মুস্তাহাব। দোয়ার মধ্যে তিনি আল্লাহ্‌র কাছে নিজের সাধারণ প্রয়োজন পেশ করবেন এবং দুনিয়া ও আখেরাতে যে সব কল্যাণ পেতে পছন্দ করেন সেগুলোও প্রার্থনা করবেন।
প্রথম স্থান: সেজদাতে। এর দলিল হচ্ছে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বাণী: "বান্দা তার প্রভুর সবচেয়ে বেশি নিকটবর্তী হয় সেজদারত অবস্থায়। অতএব, তোমরা বেশি বেশি দোয়া কর।"[সহিহ মুসলিম (৪৮২)]
দ্বিতীয় স্থান: শেষ বৈঠকের তাশাহ্‌হুদের পর, সালাম ফেরানোর আগে। দলিল হচ্ছে—ইবনে মাসউদ (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত হাদিস: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাদেরকে তাশাহ্‌হুদ শিক্ষা দিতেন। এরপর তিনি হাদিসের শেষের দিকে বলেন: "এরপর যা ইচ্ছা প্রার্থনা করবে।"[সহিহ বুখারী (৫৮৭৬) ও সহিহ মুসলিম (৪০২)]
তৃতীয় স্থান: বিতিরের নামাযের দোয়ায়ে কুনুতে। এর দলিল আবু দাউদ (১৪২৫) কর্তৃক হাসান বিন আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিত হাদিস তিনি বলেন: রাসূলুল্লাল্লাহু সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাকে কিছু বাণী শিখিয়ে দিয়েছেন সেগুলো আমি বিতিরের নামায দোয়ায়ে কুনুত হিসেবে পড়ি:
 اللَّهُمَّ اهْدِنِي فِيمَنْ هَدَيْتَ ، وَعَافِنِي فِيمَنْ عَافَيْتَ ، وَتَوَلَّنِي فِيمَنْ تَوَلَّيْتَ ، وَبَارِكْ لِي فِيمَا أَعْطَيْتَ ، وَقِنِي شَرَّ مَا قَضَيْتَ ، إِنَّكَ تَقْضِي وَلَا يُقْضَى عَلَيْكَ ، وَإِنَّهُ لَا يَذِلُّ مَنْ وَالَيْتَ ، وَلَا يَعِزُّ مَنْ عَادَيْتَ ، تَبَارَكْتَ رَبَّنَا وَتَعَالَيْتَ  
(অনুবাদ: হে আল্লাহ আপনি যাদেরকে হেদায়েত দান করেছেন, আমাকে তাদের সাথে হেদায়েত করুন। আপনি যাদেরকে নিরাপত্তা দান করেছেন, আমাকেও তাদের সাথে নিরাপত্তা দান করুন। আপনি যাদের দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন, তাদের সাথে আমার দায়িত্বও গ্রহণ করুন। আপনি আমাকে যা কিছু দান করেছেন, তাতে বরকত দান করুন। আপনি যে (তাক্বদীর) নির্ধারণ করেছেন, তার অকল্যাণ থেকে আমাকে বাঁচান। কেননা আপনিই নির্ধারণ করেন, আপনার নির্ধারণের বিরুদ্ধে কোন আপত্তি নেই। নিশ্চয় আপনি যাকে নৈকট্য দান করেন, কেউ তাকে অপমানিত করতে পারে না। আপনি যার সাথে শত্রুতা করেন, সে সম্মানিত হতে পারে না। আপনার কল্যাণ অবারিত হোক এবং আপনার মর্যাদা সমুন্নত হোক।)
দ্বিতীয় প্রকার: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নামাযের বর্ণনায় যে স্থানগুলোতে তিনি দোয়া করেছেন মর্মে উদ্ধৃত হয়েছে। কিন্তু দোয়াকে দীর্ঘ করেননি, খাস করেননি এবং সাধারণ কোন প্রয়োজন পেশ করার প্রতি উদ্বুদ্ধ করেননি। কেবল তিনি কিছু সংখ্যক বাক্য দিয়ে দোয়া করেছেন। এ স্থানগুলোর দোয়া সাধারণ দোয়ার বদলে নির্দিষ্ট কিছু যিকির আযকার পড়ার সাথে অধিক সাদৃশ্যপূর্ণ।
প্রথম স্থান: তাকবীরে তাহরীমার পরে সূরা ফাতিহা শুরু করার আগে দুয়ায়ে ইস্‌তিফ্‌তাহ।
দ্বিতীয় স্থান: রুকুতে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামে রুকুতে গিয়ে বলতেন:
سبحانك اللهمّ ربنا وبحمدك اللهمّ اغفر لي
(অনুবাদ: হে আল্লাহ্‌! হে আমাদের রব্ব! আমি আপনার প্রশংসাসহ পবিত্রতা ঘোষণা করছি। হে আল্লাহ্‌! আমাকে ক্ষমা করে দিন।)[সহিহ বুখারী (৭৬১) ও সহিহ মুসলিমে (৪৮৪) আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত]
ইমাম বুখারী (রহঃ) তাঁর সহিহ গ্রন্থে এ হাদিসের শিরোনাম দিয়েছেন এভাবে: "রুকুর দোয়া শীর্ষক পরিচ্ছেদ"।
তৃতীয় স্থান: রুকু থেকে উঠার পর। দলিল হচ্ছে—আব্দুল্লাহ বিন আবি আওফা (রাঃ) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি বলতেন:
  اللهُمَّ لَكَ الْحَمْدُ مِلْءُ السَّمَاءِ ، وَمِلْءُ الْأَرْضِ ، وَمِلْءُ مَا شِئْتَ مِنْ شَيْءٍ بَعْدُ ، اللهُمَّ طَهِّرْنِي بِالثَّلْجِ وَالْبَرَدِ وَالْمَاءِ الْبَارِدِ ، اللهُمَّ طَهِّرْنِي مِنَ الذُّنُوبِ وَالْخَطَايَا كَمَا يُنَقَّى الثَّوْبُ الْأَبْيَضُ مِنَ الْوَسَخِ  
(অনুবাদ: হে আল্লাহ্‌! আপনার প্রশংসা আসমান পূর্ণ করে, জমিন পূর্ণ করে, আর এর পরে যা পূর্ণ করা আপনার ইচ্ছা তা পূর্ণ করে। হে আল্লাহ্‌! আমাকে পবিত্র করুন বরফ দিয়ে, শিলা দিয়ে এবং ঠাণ্ডা পানি দিয়ে। হে আল্লাহ্‌! আমাকে গুনাহ ও ভুল-ভ্রান্তি থেকে পবিত্র করুন যেভাবে সাদা কাপড়কে ময়লা থেকে নির্মল করা হয়)[সহিহ মুসলিম (৪৭৬)]
চতুর্থ স্থান: দুই সেজদার মাঝখানে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দুই সেজদার মাঝখানে বলতেন:
اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي ، وَارْحَمْنِي ، وَاجْبُرْنِي ، وَاهْدِنِي ، وَارْزُقْنِي 
(অনুবাদ: হে আল্লাহ্‌! আমাকে ক্ষমা করুন, আমার প্রতি দয়া করুন, আমার সমস্ত ক্ষয়ক্ষতি পূরণ করে দিন, আমাকে হেদায়েতের উপর রাখুন, আমাকে রিযিক দিন।)[সুনানে তিরিমযি (২৮৪) আলবানী সহিহুত তিরমিযি গ্রন্থে হাদিসটিকে সহিহ বলেছেন]
ইমাম নববী বলেন:
তাতিম্মা গ্রন্থাকার বলেছেন: বলেছেন, এ দোয়া-ই করতে হবে এমনটি নয়। বরং যে কোন দোয়া করলে সুন্নত আদায় হয়ে যাবে। তবে হাদিসে যে দোয়াটি এসেছে সেটা পড়াই উত্তম।[আল-মাজমু (৩/৪৩৭) থেকে সমাপ্ত]
দাঁড়ানো অবস্থায় ক্বিরাত পড়াকালেও দোয়া করা উদ্ধৃত হয়েছে। নফল নামাযে এভাবে দোয়া করার ব্যাপারে সরাসরি দলিল এসেছে। আর ফরয নামাযে এভাবে দোয়া করাকে কোন কোন আলেম নফল নামাযের উপর কিয়াস করেছেন। দলিলটি হচ্ছে হুযাইফা (রাঃ) এর হাদিস: তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে নামায পড়েছেন। তিনি বলেন: যখনই তিনি রহমতের আয়াত পড়তেন থামতেন। থেমে দোয়া করতেন। আবার যখন আযাবের আয়াত পড়তেন থামতেন। থেমে আশ্রয় চাইতেন।[সুনানে আবু দাউদ (৮৭১), আলবানী 'সহিহু আবু দাউদ' গ্রন্থে হাদিসটিকে সহিহ বলেছেন]
কুনুতে নাযেলা (কঠিন বিপদমুক্তির দোয়া) এর মধ্যেও দোয়া করার কথা উদ্ধৃত আছে। তবে, এক্ষেত্রে মূল দোয়াটা হতে হবে বিপদ থেকে মুক্তির উপযুক্ত দোয়া। এর সাথে যদি অন্য কোন দোয়াও করে তাতে আশা করি কোন অসুবিধা হবে না।
হাফেয ইবনে হাজার (রহঃ) বলেন:
নামাযের ভেতরে যে স্থানগুলোতে দোয়া করা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে সাব্যস্ত হয়েছে সেগুলো মোট ছয়টি। এ ছয়টি উল্লেখ করার পর আরও দুইটি যোগ করেছেন:
১। তাকবীরে তাহরীমার পর। এ ব্যাপারে আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে সহিহ বুখারী ও সহিহ মুসলিমে বর্ণিত হাদিসে এসেছে:
  اللهم باعد بيني وبين خطاياي ... الحديث 
(অনুবাদ: হে আল্লাহ্‌! আমার মাঝে ও আমার গুনাহর মাঝে এমন দূরত্ব তৈরী করে দিন…শীর্ষক হাদিস।
২। রুকু থেকে সোজা হলে। এ ব্যাপারে ইবনে আবু আওফা (রাঃ) থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে তিনি من شيء بعد বলার পর বলতেন:
اللهم طهرني بالثلج والبرد والماء البارد  
(অনুবাদ: হে আল্লাহ্‌! আমাকে বরফ দিয়ে, শিলা দিয়ে ও ঠাণ্ডা পানি দিয়ে পবিত্র করুন)।
৩। রুকুতে। এ ব্যাপারে আয়েশা (রাঃ) এর হাদিসে এসেছে: তিনি তাঁর রুকুতে ও সেজদাতে বেশি বেশি বলতেন:
سبحانك اللهم ربنا وبحمدك اللهم اغفر لي
(অনুবাদ: হে আল্লাহ্‌! হে আমাদের রব্ব! আমি আল্লাহর প্রশংসাসহ পবিত্রতা ঘোষণা করছি। হে আল্লাহ্‌! আমাকে ক্ষমা করে দিন।)[সহহি বুখারী ও সহিহ মুসলিম]
৪। সেজদাতে। এটি সবচেয়ে বেশি দোয়া করার স্থান এবং এখানে দোয়া করার আদেশ দেওয়া হয়েছে।
৫। দুই সেজদার মাঝখানে। ( اللهم اغفر لي ) (অনুবাদ: হে আল্লাহ্‌! আমাকে ক্ষমা করে দিন)।
৬। তাশাহ্‌হুদে।
এছাড়াও তিনি কুনুতে দোয়া করতেন। ক্বিরাত পড়ার সময়ও দোয়া করতেন। যখনই কোন রহমতের আয়াত পড়তেন দোয়া করতেন। যখনই কোন আযাবের আয়াত পড়তেন আশ্রয় চাইতেন।[ফাতহুল বারী (১১/১৩২) থেকে সমাপ্ত]
দোয়া করার সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ স্থান দুইটি: সেজদাতে ও শেষ বৈঠকের তাশাহ্‌হুদের পর।
হাফেয ইবনে হাজার (রহঃ) বলেন:
নামাযে দোয়া করার স্থান হচ্ছে- সেজদা কিংবা তাশাহ্‌হুদ।[ফাতহুর বারী (১১/১৮৬) থেকে সমাপ্ত; আরও দেখুন প্রাগুক্ত গ্রন্থের (২/৩১৮)]
শাইখ বিন বায (রহঃ) বলেন:
নামাযে দোয়া করার স্থান: সেজদা ও আত্তাহিয়্যাতু শেষে সালাম ফেরানোর পূর্বে।[মাজমুউ ফাতাওয়া বিন বায (৮/৩১০)]
আল্লাহ্‌ই সর্বজ্ঞ।

 বিতরের কুনুতের দো'আ //
আল্লা-হুম্মা ইয়্যাকা না'বুদু, ওয়ালাকা নুসাল্লী, ওনাসজুদু, ওয়া ইলাইকা নাসআ, ওয়া নাহফিদু, নারজু রাহমাতাকা, ওয়া নাখশা ‘আযা-বাকা, ইন্না ‘আযা-বাকা বিলকাফিরীনা মুলহা। আল্লা-হুম্মা ইন্না নাসতাঈনুকা ওয়া নাসতাগফিরুকা, ওয়া নুসনী ‘আলাইকাল খাইরা, ওয়ালা-নাকফুরুকা, ওয়ানূ'মিনু বিকা, ওয়া নাখদ্বা'উ। লাকা, ওয়ানাখলাউ মাই ইয়াকফুরুকা।    হে  আল্লাহ! নিশ্চয় আমরা আপনার কাছে সাহায্য চাই, আপনার কাছে ক্ষমা চাই, আপনার উত্তম প্রশংসা করি, আপনার সাথে কুফরি করি না, আপনার উপর ঈমান আনি, আপনার প্রতি অনুগত হই, আর যে আপনার সাথে কুফরি করে আমরা তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করি।

হাদীসটি বায়হাকী তাঁর ‘আস-সুনানুল কবরা’ গ্রন্থে সংকলন করেছেন। এবং তার সনদ বিশুদ্ধ বলেছেন, ২/২১[১] আর শাইখ আলবানী। ইরওয়াউল গালীল এর ২/১৭০ এ বলেন, এর সনদ বিশুদ্ধ। আর | তা উমর রা. থেকে মওকুফ হাদীসে বর্ণিত।

 সালাতুত তাসবীহ // এ সম্পর্কে যে সমস্ত বর্নাণা এসেছে ( 1249 ) । সেগুলােকে অধিকাংশ মুহাদ্দিস যইফ ও মুনকার বলেছেন । সউদী আরবের সর্বোক্ত উলামা পরিষদ মন্তব্য করেছেন  ছালাতুত তাসবীহ ' বিদআত । এর হাদীস প্রমাণিত নয় । বরং মুনকার বা অস্বীকৃত । কোন কোন মুহাদ্দিছ জাল আলীয়ের মধ্যে  একে উল্লেখ করেছেন ।( 1250 ) এ সম্পর্কিত ইবনু আব্বাস ( রাঃ ) বর্ণিত হাদীছকে কেউ মুরসাল ’ কেউ কেউ  মওকুফ ' কেউ যঈফ এবং কেউ মওযু বা জাল বলেছেন । যদিও শায়খ আলবানী ( রহঃ ) উক্ত হাদীছের যঈফ সমূহ পরস্পরকে শক্তিশালী মনে করে তাকে হাসান ছহীহ বলেছেন এবং ইবনু হাজার আসকালানী ‘ হাসান ’ স্তরে উন্নীত বলে মন্তব্য করেছেন । এরূপ বিতকিত ও সন্দেহযুক্ত হাদীছ দ্বারা ইবাদত সাব্যস্ত করা যায় না । (1251 ) সূত্রঃ
( 1249 ) আবুদাউদ হা / ১২৯৭ । ইবনু মাজাহ হা / ১৩৮৭ ; মিশকাত হা / ১৩২৮ বঙ্গানু মিশকাত হা / ১২৫২ , ৩/১৬৪ পৃঃ । ( 1250 ), ফাতাওয়া লাজনা দায়েনাহ ৮/১৬৪ পৃঃ(  1251) , দ্রঃ ইবনু হাজার আসকালানী বিস্তারিত আলােচনা ; আলবানী , মিশকাত পরিশিষ্ট ৩ নং হাদীছ ৩ / ১৭৭৯-৮২ পৃঃ ; আবুদাউদ , ইবনু মাজাহ , মিশকাত হা / ১৩২৮ হাশিয়া ; বায়হাকী ৩/৫২ ; আব্দুল্লাহ ইবনু আহমাদ , মাসায়েলু ইমাম আহমাদ , মাসআলা নং ৪ ১৩ , ২/২৯৫ পৃঃ

বিতির  নামাজের সহীহ নিয়ম//
 রাসুলুল্লাহ  সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কখনাে কখনাে হয় বেতরের নামাযে কুনুত নামাযে দোআ কুনুত পড়তেন ।(সূত্রঃ সুনানে ইবনে নসর , দারা কুতনী - সহীহ সনদে
##তিনি নিয়মিত বেতের নামাজ এ দোয়া কুনূত পড়তেন না ।  সূত্রঃ  আবু দাউদ , নাসাঈ , মােসনাদে আহমদ , বায়হাকী , মােসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা , তেবরানী- সহীহ সনদে )রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হাসান বিন আলী ( রাঃ ) -কে বেতেরের কেরাআত শেষে নিম্নোক্ত দোআ কুনূত পড়তে শিখিয়েছেন উচ্চারণঃ আল্লাহুম্মা হদেনী ফীমান হাদাইতা ওয়া আফেনী ফীমান আফাইতা ওয়া তাওয়াল্লানী  ফিমান তাওয়াল্লাইতা ওয়া বারেক লী ফীমা আতাইতা ওয়া কেনী শাররা মা কাযাইতা ফাইন্নাকা তাকযী ওয়ালা ইউকযা আলাইকা ইন্নাহু লা ইয়াযেল্লু মান ওয়ালাইতা ওয়ালা ইয়ায়েযযু মান আদাইতা তাবারাকতা রাব্বানা ওয়াতা আলায়াইতা লাভ মানজাআ মিনকা ইল্লা ইলাইকা সূত্রঃ সহীহ ইবনে খােযায়মা , মােসান্নাফে ইবনে আবী শায়বা## বিতির সালাত সুন্নতে মুয়াক্কাদা । সূত্রঃ "ফিকহুস সুন্নাহ ১/১৪৩ ; নাসাঈ হা / ১৬৭৬ ; মির'আত ২/২০৭ ; ঐ , ৪ / ২৭৩-৭৪ , শাহ অলিউল্লাহ দেহলভী , হাতুল্লা - হিল বালিগাহ ২/১৭ ।
##আয়েশা ( রাঃ ) বলেন , রাসূলুল্লাহ ( ছাঃ ) এক রাক'আত দ্বারা বিতর করতেন ।  সূত্রঃ ইবনু মাজাহ , মিশকাত হা / ১২৮৫ ।
##তিন রাক'আত বিতর একটানা ও এক সালামে পড়াই উত্তম । সূত্রঃ ৪/২৭৪, হাকেম ১/৩০৪ পৃ:
##রাসূলুল্লাহ ( ছাঃ ) বলেন , তােমরা মাগরিবের ছালাতের ন্যায় ( মাঝখানে বৈঠক করে ) বিতর আদায় করাে না  । সূত্রঃ দারাকুতুনী হাদিস ১৬৩৪-৩৫, সনদ সহীহ ।## বিতরের কুনূত সারা বছর পড়া চলে । তবে মাঝে দেওয়া ভাল । কেননা বিতরের জন্য কুনূত ওয়াজিব নয় । সূত্রঃ  ৭৫৯ , আবুদাউদ , নাসাঈ , তিরমিযী , মিশকাত হা / ১২৯১-৯২ কুনুত অনুচ্ছেদ -৩৬ , মিত্ৰত ৪/৩০৮ ।##আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ , নাস , আবু হুরায়রা ( রাঃ ) প্রমুখ ছাহাবী থেকে বিতরের কুনূতে বুক বরাবর হাত উঠিয়ে দো'আ করা প্রমাণিত আছে। সূত্রঃ বায়হাক্বী ২ / ২১১-১২ ; মির'আত ৪/৩০০ ; তুহফা ২/৫৬৭ । ## ইমাম আবু ইউসুফ ( রহঃ ) বলেন , বিতরের কুনূতের সময় দু’হাতের তালু আসমানের দিকে বুক বরাবর উঁচু থাকবে । ইমাম ত্বহাবী ও ইমাম কারখীও এটাকে পসন্দ করেছেন । সূত্রঃ  মিরাত ৪/৩০০ পৃ:
##এই সময় মুক্তাদীগণ ‘ আমীন ‘ আমীন ' বলবেন । সূত্রঃ মির'আত ৪/৩০৭ ; ছিফাত ১৫৯ পৃঃ ; আবুদাউদ , মিশকাত হা / ১২৯০ ।


সহীহ আরবী ও ইসলাম শিক্ষা //ضএর সঠিক উচ্চারণ কি হবে ??
আরবী  ‌ض **দ্বদ **বর্ণটির উচ্চারণ ( ظ ) যোয়া  এর সাথে সামঞ্জস্য শীল । তবে  ( দাল) এর সাথে মােটেই নয় । কিন্তু এ কে ( দোয়াদ   ) উচ্চারণ করলে সলাত ফাসেদ হয়ে যাবে ।  শায়খুল ওলামা আহমদ দাহলাল বলেন : যদি ض এর উচ্চারণ  ( ظ ) ব্যতীত অন্য অক্ষরে অনুরূপ করা হয় তবে এই কিরআত আদৌ জায়েয হবে না । ض এর উচ্চারণ  (যাল, এর সঙ্গে বদলিয়ে পাঠ করলে সালাত ফাসেদ হওয়ার কাহারাে দ্বিমত নেই । এবং এই কিরআত কাহারাে নিকট বিশুদ্ধ বলে গণ্য হবে না । ( আল ইকতেহাদ পৃঃ ১৩ ) I  মৌলভী কারীমুল্লাহ হানাফী কুতুবুদ্দিন খানের ফাতাওয়ার উপর লিখেছেন-ض  কে **দাল** উচ্চারণ করা মারাত্মক ভুল । জ্ঞানী লােকগণ বুঝে থাকেন আর মুখগণ জেদ করে থাকে । হক কথা হচ্ছে অনুস্বরণ করা এবং বতিলকে ধ্বংস করে দেওয়া । ( আল ইকতেহাদ পৃঃ ১৫ ) মাওলানা আঃ হাই লক্ষ্ণৌভী বলেন , ض কে** দোয়াদ** পড়লে সালাত নষ্ট হয়ে যাবে । মজমুআ ফাতাওয়া ১ ম পৃঃ ১৯৭  ।মাওলানা আশ্রাফ আলী থানভী জামালুল কুরআন উর্দু মাখরাজ অধ্যায়- মুফতী আমীমুল ইহসান হাদীয়াতুল মুসাল্লিন ( পৃঃ ৬২ দেখুন ) ।


মাথার এক-চতুর্থাংশ মাসাহ করা :
 মাথা মাসাহ করার ব্যাপারে অবহেলা ও উদাসীনতা লক্ষ্য করা যায়। কেউ চুল স্পর্শ করাকেই মাসাহ মনে করেন, কেউ মাথার চার ভাগের একভাগ মাসাহ করেন এবং কুরআনের আয়াতের ব্যাখ্যায় নেমে পড়েন হেদায়ার লেখক চার ভাগের এক ভাগ মাসাহ করার কথা উল্লেখ করেছেন। আর দলীল হিসাবে পেশ করেছেন ছহীহ মুসলিমের হাদীছ। অথচ উক্ত হাদীছে পাগড়ী থাকা অবস্থায় মাসাহ করা সম্পর্কে আলােচনা করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, কুদূরী এবং হেদায়াতে মুগীরা (রাঃ)-এর নামে যে হাদীছ বর্ণিত হয়েছে, তা ভুল হয়েছে।129 যা হেদায়ার টীকাতেও ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। তারা দুইটি হাদীছকে একত্রে মিশ্রিত করে উল্লেখ করেছেন।130 সুধী পাঠক! শরী'আতের ব্যাখ্যা হিসাবে রাসূল (ছাঃ) সুন্দরভাবে মাথা মাসাহ করার পদ্ধতি বর্ণনা করেছেন। কারণ পবিত্র কুরআন তার উপরই নাযিল হয়েছে। আর তিনি মাথার সামনের দিক থেকে শুরু করে পিছনে চুলের শেষ পর্যন্ত দুই হাত নিয়ে যেতেন এবং সেখান থেকে সামনে নিয়ে এসে শেষ করতেন। এভাবে তিনি পুরো মাথা মাসাহ করতেন। যেমন
129. দ্রঃ ছহীহ মুসলিম হা/৬৪৭, ১/১৩৩ পৃঃ ও হা/৬৫৬, ১/১৩৪ পৃঃ। 130. আবুল হাসান বিন আহমাদ বিন জাফর আল-বাগদাদী আল-কুদূরী, মুখতাছারুল
কুদূরী

(ঢাকা : ইসলামিয়া কুতুবখানা, বাংলাবাজার ১৯৮২/১৪০৩), পৃঃ ৩; শায়খুল ইসলাম
বুরহানুদ্দীন আবুল হাসান আলী ইবনু আবী বকর আল-মারগীনানী (৫১১-৫৯৩ হিঃ), আল-হেদায়াহ (নাদিয়াতুল কুরআন কুতুবখানা
(১৪০১), ১/১৭ পৃঃ; বঙ্গানুবাদ (ঢাকা : ইসলামিক ফাউন্ডেশন
বাংলাদেশ, তৃতীয় সংস্করণ :
মার্চ ২০০৬), ১/৬ পৃঃ।


ثم مسح رأسه

بيديه فأقبل بهما وأدبر بدأ بمقدم رأسه حتى هب بهما إلى قفاه ثم ردهما إلى المكان
الذي بدأ منه.

ثم مسح رأسه بيديه فأقبل بهما وأدر بدأ بمقدم رأسه حتى

هب بهما إلى قفاه ثم دهما إلى المكان الذي بدأ منه.

অতঃপর তিনি তার দুই হাত দ্বারা মাথা

মাসাহ করেন। এতে দুই হাত তিনি সামনে করেন এবং পিছনে নেন। তিনি মাথার অগ্রভাগ থেকে
শুরু করে ঘাড় পর্যন্ত নিয়ে যেতেন অতঃপর যে স্থান থেকে শুরু করেছিলেন সেখানে আবার
ফিরিয়ে নিয়ে আসেন।131 ইমাম ইবনুল কাইয়িম (৬৯১-৭৪১ হিঃ) রাসূল (ছাঃ) কখনো মাথার কিছু অংশ মাসাহ
করেছেন মর্মে কোন একটি হাদীছ থেকেও প্রমাণিত হয়নি।132 উল্লেখ্য, পাগড়ী পরা অবস্থায় থাকলে মাথার অগ্রভাগ মাসাহ করা যাবে।133 আরো
উল্লেখ্য যে, পাগড়ীর নীচে
মাসাহ করতেন বলে আবুদাউদে যে হাদীছ বর্ণিত হয়েছে তা যঈফ।134


Source 131. ছহীহ বুখারী হা/১৮৫, ১/৩১ পৃঃ; বুখারী (ইফাবা হা/১৮৫); মুত্তাফাক্ব আলাইহ,
মিশকাত

হা/৩৯৪, পৃঃ ৪৫; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/৩৬২, ২/৭৮ পৃঃ; ছহীহ

তিরমিযী

হা/৩৪। 132. ইবনুল কাইয়িম, যাদুল মা'আদ ১/১৮৫ পৃঃ, মাসাহ করার বর্ণনা। 133ছহীহ মুসলিম
হা/৬৫৬, ৫৭, ৫৯, ১/১৩৪ পৃঃ, (ইফাবা হা/৫২৪ ও
৫২৫);

মিশকাত

হা/৩৯৯, পৃঃ ৪৬; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/৩৬৭, ২/৮১ পৃঃ; ইবনুল

কাইয়িম, যাদুল মা'আদ ১/১৮৫ পৃঃ, মাসাহ করার

বর্ণনা। 134 যঈফ আবুদাউদ হা/১৪৭, ১/১৯-২০ পৃঃ; যঈফ ইবনে মাজাহ
হা/৫৬৪। ১৩৫. পূর্ণাঙ্গ নামায শিক্ষা, পৃঃ ৪২ ও ৪৪। ১৩৬. ঐ, (ঢাকা : মুমতায লাইব্রেরী, ১১, বাংলাবাজার, দ্বিতীয় সংস্করণ, জানুয়ারী ২০১০), পৃঃ ১১৪-১১৫।

See more www.ahlehadeethbd.org



অজুতে ঘাড় মাসহ সম্পর্কিত হাদিস গুলোর তাহকীক: // ) ওহায়েল বিন হুজর ( রাঃ ) রাসূল ( ছাঃ ) -এর ওযুর পদ্ধতি সম্পর্কে বর্ণনা করেন। অতপর তিনি তিনবার তার মাথা মাসাহ করেন এবং দুই কানের পিঠ মাসাহ করেন ও ঘাড় মাসাহ করেন , নাড়ির পার্শ্ব মাসাহ করেন মাথার অতিরিক্ত পানি দিয়ে । 137,তাহক্বীক : বর্ণনাটি জাল138 - ইমাম নববী ( রহঃ ) 139 ( ) আমর ইবনু কা'ব বলেন , রাসূলুল্লাহ ( ছাঃ ) -কে ওযু করার সময় আমি দাড়ির পার্শ্ব এবং ঘাড় মাসাহ করতে দেখেছি । 140,তাহকীক : বর্ণনাটি জাল । ইবনুল কান বলেন , এর সনদ অপরিচিত । 141,মুছাররফসহ তার পিতা ও দাদা সবাই অপরিচিত । ( ) ত্বালহা ইবনু মুহাররফ তার পিতার সূত্রে তার দাদা থেকে বর্ণনা করেন । যে , আমি রাসূল ( ছাঃ ) -কে দেখেছি তিনি একবার তার মাথা মাসাহ করতেন এমনকি তিনি মাথার পশ্চাদ্ভাগ পর্যন্ত পৌছাতেনআর তা হল ঘাড়ের অগ্রভাগ142, তাহক্বীক : হাদীছটি মুনকার বা অস্বীকৃত । ১৩৭ , তুবারণী কাবীর হা ১ ৭৫৮৪ , ২২/৫০ ১৩৮. সিলসিলা যঈফাহ হা / ৬৯ ৭৪৪ ১৩৯ , আল - মাজমূ ' শরহুল মুহায্যাব ১/৪৬৫ পৃঃ । ১৪০. ত্বাবারাণী কাবীর ১৯/১৮১ ১৪১ লিসল মীন ।১৪২ আবু দাউদ হা-৩২


অজুতে ঘাড় মাসহ সম্পর্কিত হাদিস গুলোর তাহকীক: // ( ঘ ) "ঘাড়  মাসাহ করলে বেড়ী থেকে নিরাপদ থাকবে । তাহকীক : বর্ণনাটি জাল । ইমাম সুয়ুত্বী জাল হাদীছের গ্রন্থে হাদীছটি বর্ণনা করেছেন । ( 145)  ( ঙ ) “ যে ব্যক্তি ওযু করবে এবং ঘাড় মাসাহ করবে , তাকে কিয়ামতের দিন বেড়ী দ্বারা বাধা হবে না'। (146)তাহক্বীকৃ : বর্ণনাটি জাল বা মিথ্যা । (147 ) আল্লামা মােল্লা আলী ক্বারী হানাফী উক্ত বর্ণনাকে জাল বলেছেন ।  (148) উক্ত বর্ণনায় মুহাম্মাদ ইবনু আমল আল আনছারী ও মুহাম্মাদ ইবনু আহমাদ ইবনে মুহাররম নামের দুজন রাবী এটিপূর্ণ । মুহাদ্দি ছগণ তাদেরকে দুর্বল বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন । (149)উল্লেখ্য যে , ঘাড় মাসাহ করা সম্পর্কে এ ধরনের মিথ্যা বর্ণনা আরাে আছে । এর দ্বারা প্রতারিত হওয়া যাবে না । বরং ঘাড় মাসাহ করার অভ্যাস ছেড়ে দিতে হবে । (  ১৪৩ , যঈফ আবুদাউদ হা / ১৩২ ১৪৪. সিলসিলা যঈফাহ হা / ৬৯ , ১/১৬৮ পৃঃ । ১৪৫. হাফেয়ী জালালুদ্দীন আস - সুয়ূত্ব , আল - আলিল মাছ " আহ ফিল আহাদীছিল মাওযূ'আহ , পৃঃ ২০৩ , দ্রঃ সিলসিলা যঈফাহ ১/১৬৮ পৃঃ । ১৪ ৬. আবু নুআইম , তারীখুল আইবাহন ২/১১৫ পৃঃ । ১৪ ৭ , সিলসিলা যঈফাহ হা / ৭৪ 5 , ২/১৬৭ পৃঃ । ১৪৮ , আল - মাছ ' ফী মা'রেফাতিল হাদীছিল মাওযু ' , পৃঃ ৭৩ , ঐ সিলসিলা যঈফাহ ১/১৬৯ পৃঃ । ১৪৯ , সিলসিলা যঈফাহ ১/১৬৯ পৃঃ । 

সাহারীর আযানঃ

সাহারীর আযান দেওয়া সুন্নাত। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর যামানায় তাহাজ্জুদ ও সাহারীর আযান বেলাল (রাঃ) দিতেন এবং ফজরের আযান অন্ধ ছাহাবী আব্দুল্লাহ ইবনে উম্মে মাকতূম (রাঃ) দিতেন। তাই রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেনবেলাল রাত্রি থাকতে আযান দিলে তোমরা (সাহারীর জন্য) খানাপিনা করযতক্ষণ না ইবনে উম্মে মাকতূম আযান দেয়। কেননা সে ফজর না হওয়া পর্যন্ত আযান দেয় না [মিশকাত হা/৬৮০] তিনি আরও বলেনবেলালের আযান যেন তোমাদেরকে সাহারী খাওয়া থেকে বিরত না করে। কেননা সে রাত্রি থাকতে আযান দেয় এজন্য যেযেন তোমাদের তাহাজ্জুদ গোযার মুছল্লীগণ (সাহারীর জন্য) ফিরে আসে ও তোমাদের ঘুমন্ত ব্যক্তিগণ (তাহাজ্জুদ বা সাহারীর জন্য) জেগে ওঠে [মুসলিমমিশকাত হা/৬৮১]এটা কেবল রামাযান মাসের জন্য ছিল না। বরং অন্য সময়ের জন্যও ছিল। কেননা রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর যামানায় অধিক সংখ্যক ছাহাবী নফল ছিয়াম রাখতেন। [মিরআত ২/৩৮২হা/৬৮৫-এর আলোচনা দ্রষ্টব্য।] 

আজও রামাযান মাসে সকল মসজিদে এবং অন্য মাসে যদি কোন মসজিদের অধিকসংখ্যক প্রতিবেশী নফল ছিয়ামে যেমন আশূরার দুটি ছিয়ামআরাফাহর একটি ছিয়ামশাওয়ালের ছয়টি ছিয়াম ও তাহাজ্জুদে অভ্যস্ত হনতাহলে ঐ মসজিদে নিয়মিতভাবে উক্ত আযান দেওয়া যেতে পারে। যেমন মক্কা ও মদীনায় দুই হারামে সারা বছর দেওয়া হয়ে থাকে। 
         সুরূজী প্রমুখ কিছু সংখ্যক হানাফী বিদ্বান রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর যামানার উক্ত আযানকে সাহারীর জন্য লোকজনকে আহবান ও সরবে যিকর বলে দাবী করেছেন। ছহীহ বুখারীর সর্বশেষ ভাষ্যকার হাফেয ইবনু হাজার আসক্বালানী বলেনএই দাবী মারদূদ বা প্রত্যাখাত। কেননা লোকেরা ঘুম জাগানোর নামে আজকাল যা করেতা সম্পূর্ণরূপে বিদআত যা ধর্মের নামে নতুন সৃষ্টি। উক্ত আযান-এর অর্থ সকলেই আযান বুঝেছেন। যদি ওটা আযান না হয়ে অন্য কিছু হতাহলে লোকদের ধোঁকায় পড়ার প্রশ্নই উঠতো না। আর রাসূল (ছাঃ)-কেও সাবধান করার দরকার পড়তো না। [ফাৎহুল বারী শরহ ছহীহ বুখারী ফজরের পূর্বে আযান অনুচ্ছেদ ২/১২৩-২৪]

আযানের অন্যান্য মাসায়েলঃ

১. আযানের উদ্দেশ্য হবে স্রেফ আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা। এজন্য কোন মজুরী চাওয়া যাবে না। তবে বিনা চাওয়ায় সম্মানী গ্রহণ করা যাবে। কেননা নিয়মিত ইমাম ও মুওয়াযযিনের সম্মানজনক জীবিকার দায়িত্ব গ্রহণ করা সমাজ ও সরকারের উপরে অপরিহার্য কর্তব্য। [আহমাদআবুদাঊদনাসাঈতিরমিযীইবনু মাজাহ]
২. আযান ওযূ অবস্থায় দেওয়া উচিত। তবে বে-ওযূ অবস্থায় দেওয়াও জায়েয আছে। আযানের জওয়াব বা অনুরূপ যেকোন তাসবীহতাহলীল ও দোআ সমূহ এমনকি নাপাক অবস্থায়ও পাঠ করা জায়েয আছে। [ফিক্বহুস সুন্নাহ ১/৫১-৫২]

৩. এক্বামতের পরে দীর্ঘ বিরতি হলেও পুনরায় এক্বামত দিতে হবে না [ফিক্বহুস সুন্নাহ ১/৮৯৯২ পৃঃ ;ছালাতুর রাসূল,তাখরীজ :আব্দুর রঊফ,১৯৮ পৃঃ।]
৪.ক্বাযা ছালাত জামাআত সহকারে আদায়ের জন্য আযান আবশ্যিক নয়। কেবল এক্বামতই যথেষ্ট হবে। [মুসলিম, মিশকাত হা/৬৮৪, দেরীতে আযান অনুচ্ছেদ-;মিরআত ২/৩৮৭]
৫. আযান ও জামাআত শেষে কেউ মসজিদে এলে কেবল এক্বামত দিয়েই জামাআত ও ছালাত আদায় করবে। [ফিক্বহুস সুন্নাহ ১/৯১ আযান অধ্যায়,মাসআলা-১৮।]
৬. যিনি আযান দিবেন,তিনিই এক্বামত দিবেন। অন্যেও দিতে পারেন। অবশ্য মসজিদে নির্দিষ্ট মুওয়াযযিন থাকলে তার অনুমতি নিয়ে অন্যের আযান ও এক্বামত দেওয়া উচিত। তবে সময় চলে যাওয়ার উপক্রম হলে যে কেউ আযান দিতে পারেন। [ফিক্বহুস সুন্নাহ ১/৯০,৯২ পৃঃ;মাসআলা-১৩,২০।]

লেবেল

MKRdezign

যোগাযোগ ফর্ম

নাম

ইমেল *

বার্তা *

Blogger দ্বারা পরিচালিত.
Javascript DisablePlease Enable Javascript To See All Widget