শাকসবজিতে পানি, শর্করা, সেলুলোজ, পেকটিন, খনিজ উপাদান, ভিটামিন কম-বেশি পরিমাণে থাকে। তবে শাকসবজির কোষে নিম্নলিখিত উপাদানগুলোও থাকে।
১. উদ্ভিদ কোষের প্রাচীর সেলুলোজ দিয়ে তৈরি। এর ফলে কোষ প্রাচীর কঠিন ও অস্থিতিস্থাপক হয়। প্রাচীরে হেমিসেলুলোজও থাকে।
২. প্রাচীরের নিচে পেকটিন জাতীয় শর্করা থাকে যা আঠার মতো কাজ করে এবং সবজির খোসাকে ভেতরের অংশে আটকে রাখে। সবজি পরিপক্ব হলে পেকটিন দ্রবীভূত হয় এবং খোসা ঢিলে হয়ে পড়ে।
৩. প্রাচীরের ভেতর Protoplasmic Membrane থাকে যা Protoplasm-কে ধরে রাখে। এতে Plastids ও থাকে, যাতে ওই শাকসবজির রঞ্জক পদার্থ অবস্থান করে। এগুলো হচ্ছে-
ক. কেøারোপ্লাস্টস- এতে সবুজ রঞ্জক পদার্থ কেøারোফিল থাকে। পাতায় এই পদার্থ বেশি থাকে।
খ. ক্রোমোপ্লাস্টস- এতে পানিতে অদ্রবণীয় হলুদ, কমলা বর্ণের ক্যারোটিন থাকে যেমন- মিষ্টিকুমড়া, গাজর ইত্যাদি।
৪. লিউকোপ্লাস্টস-বর্ণহীন, এতে এ্যানথোসায়ানিন ও ফ্লেভোনস জাতীয় বর্ণহীন উপাদান থাকে যেমন আলু, শালগম, মুলা ইত্যাদি। এ্যানথোসায়ানিন অবশ্য লাল, বেগুনি রঞ্জক পদার্থের উপাদান, যেমন-বীট, লালশাক, বাধাঁকপি ইত্যাদিতে থাকে।
৫. কোষের ভেতর বেশির ভাগ জায়গাজুড়ে Vacuoles থাকে যাতে সেলুলোজ, কিছু প্রোটিন ও চর্বির মিশ্রণ থাকে।
বেশির ভাগ শাকসবজিতে পানির পরিমাণ বেশি (>৮০ শতাংশ) এবং প্রোটিন ২-৩ শতাংশ। বিচি, শিম-এ প্রেটিন বেশি থাকে। কন্দ ও মূলজাতীয় সবজিতে শ্বেতসার প্রচুর থাকে। ডাঁটা, পাতায়, সবজির খোসায় সেলুলোজ, হেমিসেলুলোজ, পেকটিন, গাম থাকে যা সবজির কাঠিন্য ও আকার ঠিক রাখে। এছাড়াও কিছু এনজাইম ও inhibitors থাকে।
সবুজপাতায়, পালংশাকে, বিট, সবুজ বীজে oxalic acid থাকে। খনিজ উপাদানের মধ্যে K, Ca, Fe, Na ইত্যাদি থাকে লবণরূপে যেমন phosphates, chlorides, carbonates ইত্যাদি। Phenolic যৌগ hydroxyl acids, flavones সবজিতে থাকে। সালফারজাতীয় যৌগের জন্য সবজিতে বিশেষ ধরনের গন্ধ পাওয়া যায়। আলুতে 2-isopropyl-3-me thoxypyrazine, বাঁধাকপিতে dimethyl sulfide, পেঁয়াজে thriopropanal-s-oxide অথবা এদের মিশ্রিত যৌগ থাকে। পেঁয়াজ, বাঁধাকপি, মুলা, সরিষা প্রভৃতিতে উদ্বায়ী সালফার যৌগ থাকে যার গন্ধ রান্নার সময় ছড়িয়ে পড়ে। গ্লাইকোসাইড জাতীয় উপাদানের জন্য করলা, লেবুর খোসা তেতো লাগে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন